সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার পটলাই নদীর নাব্যতা সংকটের কারণে তীব্র নৌজট সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষায় পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে নেমে আসা পলি ও বালি জমে যাওয়ার কারণে নদীর বেশির ভাগ এলাকা ভরাট হয়েছে। এতে গত ১১ দিন ধরে আটকা পড়ে আছে চুনাপাথর ও কয়লা বোঝাই পাঁচ শতাধিক ছোটবড় বাল্কহেড। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন নৌযান চালক, মালিক ও শ্রমিকরা।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, নদীর নাব্যতা সংকটের কারণেই এমন নৌজট সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ৩০ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে সময় লাগছে ১৫ থেকে ২০ দিনের বেশি। সেই সময়ে পাড়ি দেওয়া যাবে কি না তাও অনিশ্চিত। অন্যদিকে আটকা থাকার কারণে বাল্কহেডগুলোতে থাকা পণ্যর নিরাপত্তা পাচ্ছেন না তারা। ফলে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগচ্ছেন নৌযান চালকরা। এতে ব্যবসায়ী ও নৌযানের চালকরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সুলেমানপুর বাজার সংলগ্ন এলাকার পাটাবুকা থেকে কানামইয়া বিল পর্যন্ত প্রতি বছর নৌ-জটের সৃষ্টি হয়। এই নদীপথেই প্রতি বছর উপজেলার সীমান্তবর্তী বড়ছড়া, বাগলী, চাড়াগাঁও তিনটি শুল্ক স্টেশন থেকে কোটি কোটি ঘনফুট কয়লা, চুনাপাথর সারা দেশে যোগান দেন ব্যবসায়ীরা। এসব পণ্য পরিবহনের একমাত্র মাধ্যম নদীপথ। কিন্তু নদীগুলোর নাব্যতা সংকটের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যে ভাটা পরছে। বিপন্ন হতে চলেছে নদী পাড়ের লোকজনের জীবন ও জীবিকা।
সুলেমানপুর বাজার থেকে বাঁশচাতল পর্যন্ত দুই কিলোমিটার নৌপথ। এটুকু পথের নাব্যতা সংকটের কারণে নদীর ৭ কিলোমিটার এলাকায় নৌজট দেখা দিয়েছে। পাঁচ শতাধিক নৌযান ১১ দিনের বেশি সময় ধরে আটকে আছে।
নৌযান চালক জামিল মিয়া বলেন, ‘১০ দিন ধরে নৌজটে আটকা আছি। বর্ষাকালে এই এলাকাটি পাড়ি দিতে মাত্র কয়েক মিনিট সময় লাগে, কিন্তু এখন কয়দিন যে লাগবে তা বলা যাচ্ছে না।’
বাল্কহেডের চালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দুঃখের কথা কি আর বলবো! প্রত্যেক বছর এই নদীতে নৌজট সৃষ্টি হয়। নৌজটে আইসা ১০-১৫ দিন বসে থাকা লাগে। নৌকা চালাই দুইটা টাকা আয় করার জন্য। কিন্তু এখনকার সময়ে আয় তো দূরের কথা আরও ব্যায় হবে। তাহলে নিজে খাইমু কি আর পরিবারের সদস্যরাই খাইবো কি?’
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রায়হান কবির বলেন, ‘৩০ জন স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে এই নৌজট ছাড়াতে কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি দ্রুতই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। নৌজট নিয়ে যাতে কোনো পক্ষ চাঁদাবাজি করতে না পেরে, সে জন্য প্রশাসন সচেষ্ট রয়েছে। যদি এ ধরনের কোনো অভিযোগ আসে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কলমকথা/ সাথী
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।